❤ রাধারাণীর দেরি সহ্য হয়না ❤
বৃন্দাবনে বর্ষনা তে রাধা রানীর মন্দিরের বাইরে
বসে থাকতেন একজন বৃদ্ধবাবা মন্দিরে আসা যাওয়া ভক্তদের কাছে মাদুকরি করে যা পেতেন ,তাই দিয়ে চলতেন, রোজ মন্দিরে এসে আগে শ্যাম সুন্দর রাধা রানী কে দর্শন করতেন খুব কষ্ট হতো ওনার উপরে উঠতে, কিন্তু তবুও তিনি দর্শন করতে আসতেন, শ্যাম সুন্দর ও রাধা রানী কে খুব যে ভালবাসতেন, শ্যাম সুন্দর ও রাধা রানীর পড়নের কাপড় গুলি খুব ধ্যান করে দেখতেন, আর মনে মনে বলতেন, আমি যদি এমন পোশাক বানিয়ে নিয়ে এসে আমার শ্যাম সুন্দর ও রাধা রানী কে পরাতে পারতাম, এমন করে প্রতিদিন তিনি ভাবতেন আর অশ্রু জল ফেলতেন , কারণ ওনার কাছে টাকা পয়সা ছিল না তাই, কিভাবে বানিয়ে দেবেন পোশাক শ্যাম সুন্দর ও রাধা রানীর,।
একদিন হঠাৎ করে ওনি সিদ্ধান্ত নিলেন, পোশাক বানিয়ে নিয়ে শ্যাম সুন্দর ও রাধা রানী কে পরাবেই, মাদুকরির সাথে অনেক সময় কোন কোন দর্শনার্থী অল্প অল্প পয়সা ও দিয়ে যেত, । তাই ওনি এবার ভাবলেন ওই পয়সা ওনি জমিয়ে কাপড় কিনে এনে নিজেই বানিয়ে দেবেন, ।
কয়েক দিন পরে সীমিত পয়সা দিয়ে যেমন কাপড় পেলেন কিনে নিয়ে এলেন, তারপর নিজেই কেটে কুটে বানাতে শুরু করলেন, চখে কম দেখে তো তাই, বড় দেখে সূচ ও সুতো নিয়ে এলেন, বর বর করে দাগা দিয়ে সেলাই করলেন শ্যাম সুন্দর ও রাধা রানীর পোশাক, ।
সত্যি কার অর্থে ভগবান তো পোশাক দেখবেন না,দেখবেন ভক্তের হৃদয়ে , কেমন ভক্তি তার জন্যে। আচ্ছা যাই হউক যেমন করে বানিয়েছেন সেই পোশাক নিয়ে পরের দিন এলেন,। বর্ষনার মন্দির তো অনেক উপরে, তাই ওনি যেতে যেতে হাঁপিয়ে যান, পথের মাঝখানে বসে একটু বিশ্রাম নিতে বসলেন, এমন সময় একটি সাত- আট বছর বয়সের একটি মেয়ে দৌরে দৌরে তার কাছে এলেন, ।
তাকে বললেন কি হয়েছে আপনার, শরীর খারাপ লাগছে?, আর আপনার হাতে ওই পুঁটুলিতে কি আছে, দেখি দেখি, বৃদ্ধা বললেন কিছু না, কিন্তু মেয়েটি শুনলো না, তানা তানি করে নিয়ে দৌরে পালিয়ে গেল,। এদিকে বৃদ্ধা বসে বসে কাঁদতে শুরু করলেন, খুব কষ্ট করে পোশাক বানিয়ে নিয়ে এসে ছিলেন, শ্যাম সুন্দর কে পরাবে বলে আর পোশাক পরাতে পারলেন না এই বলে বলে, । ওই সময় কয়েক জন ভক্ত যাচ্ছিলেন মন্দিরে বৃদ্ধা কাঁদছে দেখে তারা গেলেন বৃদ্ধার সামনে, কেন কাঁদছ সে তারা জিজ্ঞেস করলেন, বৃদ্ধা বললেন আমি খুব কষ্ট করে পোশাক বানিয়ে নিয়ে এসে ছিলাম শ্যাম সুন্দর ও রাধা রানী কে পরাবো বলে, কোথা থেকে একটি মেয়ে এসে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল,আমি কিছুই করতে পারিনি, দৌরে পালিয়ে গেল কোথায় তা ও দেখতে পেলেন না,
ওনারা বললেন কি আর করবেন এখন , যা হবার তো হয়েই গিয়েছে, আপনি গিয়ে এমনি দর্শন করে আসুন, এই বলে ওনারা চলে গেলেন, বৃদ্ধা মনের মধ্যে খুব ব্যথা নিয়ে আস্তে আস্তে করে আসতে লাগলেন মন্দিরে , মন্দিরে আসার পর যখন মন্দিরের ভিতরের ধোঁয়ার খুললো, শ্যাম সুন্দর ও রাধা রানী কে দর্শন করতে গিয়ে বৃদ্ধা অবাক হয়ে গেলেন, এ কি ,এ কেমন করে সম্ভব? এই তো আমার বানানো সেই পোশাক।
রাধা রানী ভিতর থেকে উত্তর দিলেন, আমিই নিয়ে এসেছি, বৃদ্ধা বললেন তুমি কেন কষ্ট করে আনতে গেলে, আমিই তো নিয়ে আসতে ছিলাম, রাধা রানী বললেন তোমার হাতের বানানো পোশাক আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে, তাই দেরি সহ্য করতে পারলাম না, তুমি তো হাঁটতে পারনা, আসতে তোমার দেরি হচ্ছিল, তাই তো আমি দেরী সহ্য করতে না পেরে নিজেই দৌরে গিয়ে নিয়ে এলাম, তারা তারি পরবো বলে, খুব পছন্দের পোশাক তো তাই ।
বৃদ্ধ বাবা বললেন সত্যিই রাধা রানী তুমি বরই কৃপালু, খুব দয়ালু, তোমাকে ভক্তরা রোজ রোজ কত দামি সুন্দর সুন্দর পোশাক পরান, আর আমার বানানো উল্টো সিধে সেলাই বর বর করে দাগা, সেটা পরার জন্য তোমার এতই তারা তারি লেগেছিল........... তখন ভিতর থেকে আওয়াজ এলো আমি তোমার ভালোবাসা দেখেছি, ভক্তি দেখছি, তাইতো আমার তারা তারি লেগেছিল, ভালো বেসে ভক্তি সহকারে কেউ কিছু দিলে আমার দে দেরি সহ্য হয়না ।
ভগবান আমাদের ভালবাসা দেখেন, ভক্তি দেখেন, সাধনা দেখেন, আর ভক্তি সহকারে ভগবান কে ভালবাসলে ভগবান কে পাওয়া সম্ভব হয় । ভক্তিই হচ্ছে সবার ওপরে । তাই আসুন আমরা ভগবান কে ভক্তি সহকারে ভালবাসি....
------------------------------------------------------------------------------
পরম আদরে এবং অনন্য ভক্তি সহকারে জপ করার ফলেই আমরা চিন্ময় আনন্দ অনুভব করতে পারব.
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে...
হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করুন এবং সুখী হউন...
0 Comments