আজকের আলোচনা- "তিলক"।
আমাদের দেশে খুব অল্প মানুষ তিলক কপালে দেয়। আমরা দেখতে পারি কোন নামযজ্ঞ কিংবা কির্তনে গেলে মানুষের কপালে তিলক দেওয়া হয়। আমরা সাধারণত দেখি বয়স্ক মানুষদের তিলক কপালে দিতে। কিন্তু ধর্ম মানুষের বুড় বয়সে করবার জন্য নয়। শিশু কাল থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আমাদের হরি নাম করা উচিত। কপালে তিলক দিয়ে হরি নাম করলে হরি কৃপা অবশ্যই করে। আসুন আজ আমরা তিলকের মহিমা জানি।
👉আমরা যে বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করবো তা সংক্ষেপে একটি ধারণা দিলাম নিচেঃ
১/ তিলকের উৎপত্তি কিভাবে।
২/ তিলকে কে কোথায় বাস করেন।
৩/ শ্রীকৃষ্ণ তিলক পরেন কেন।
৪/ শ্রীরাধা রানী তিলক পরেন না কেন।
৫/ তিলক ছাড়া সন্ধ্যা-বন্দনা হবে কি না।
৬/ তিলক দেখে যমরাজ কেন পালায়।
"যজ্ঞো দানং তপো হোমঃ স্বাধ্যায়ঃ পিতৃতর্পণম্।
ব্যর্থং ভব তত্ সর্বমূর্দ্ধপূনড্রং বিনাকৃতং পদ্মপুরাণ ।"
অর্থাৎঃ তিলক ব্যতিরেকে যজ্ঞ ,দান, তপস্যা ,হোম ,বেদ শাস্ত্রাদি পাঠ, পিতৃতর্পণাদি ও শুভ কর্ম যা কিছু করা হয় তা বৃথা হয়ে যায়।
অনেকেই কিন্তু তিলকের ফোঁটা দেন কিন্তু সেটা ঠিক নয়। উর্দ্ধপূনড্র করে অর্থাৎ গৌড়ীয় বৈষ্ণব যেভাবে পরেন।
👉"তিলকের মহিমা"
কপালে তিলক দেখে মনে হয় দেবী ,
তা নাহলে শুধু মনে হয় জল-ছবি।
তিলক আর ত্রি-লোকে গোবিন্দের বাস,
ভক্তের মাধ্যমে তাঁর মহিমা প্রকাশ।
তিলক দেখে মুখে আসে কৃষ্ণ নাম ,
মৃত্যুকালে নরকে নিতে পারেনা যম রাজ।
শাস্ত্রে আছে তিলকের কত যে মহিমা ,
তিলকের মধ্যে বিষ্ণু, ডানে শিব বামে ব্রহ্মা।
তিলক না থাকে তবে কপাল শ্মশাণ ,
সর্ব কার্যে তিলক করে শুভ শক্তিদান।
শুভ কার্যে কপালে যদি থাকে তিলক ,
সর্বলোকে গুন গায় গতি উর্ধ্ব-লোক।
তিলকের উৎপত্তি হয় গোপী পদরেনু ,
গোবিন্দের কপালে তিলক বাজায় বেনু।
তিলক থাকে গোপীদের চরণ কমলে ,
ভক্তের মহিমা বাড়াতে কৃষ্ণের কপালে।
গোপী পদরেনু তাই রাধার কপালে তিলক নাই ,
তিলক বিনে গুরু-কৃষ্ণ সেবা বিফলে গেল ভাই।
👉বিঃ দ্রঃ একবার কিছু ভক্ত সন্ধ্যা আরতি করে মহাপ্রভুকে প্রণাম নিবেদন করলেন। তখন মহাপ্রভু জানতে চাইলেন সন্ধ্যা আরতি করেছ। ভক্তেরা হাঁ বলেন। প্রভূ তখন বললেন তিলক ব্যাতিত সন্ধ্যা আরতি হবে না। তোমরা সবাই তিলক পড়ে আস। তিলক করে পূনরায় সন্ধ্যা আরতি করে আস।
👉শ্রীচৈতন্যমঙ্গল রচয়িতা শ্রীলোচন দাস ঠাকুর গেয়েছেন-
“তিলক ধারন না করে যে জন,
বৃথা জনম তার ।।”
বিষ্ণু পুরাণে বিষ্ণুদেব নারদ কে বলেছেন,
নারদ আমার প্রিয় ভক্ত সেই হয় যে আমার গুণ কীর্তন সর্বদা করে কপালে চন্দন পরিধান করে, যে ভক্ত কপালে চন্দন পরিধান করে না সে ভক্তের কপাল শশানে পরিণিত হয়! পবিত্র চন্দন শরীরে লেপন করলে পাপ ও অশুভ শক্তি বিনষ্ট হয়!
👉বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি?
বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানতে পারে কপালে চন্দন দিলে মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখে, ধর্য্যশক্তি বৃদ্ধি করে, মনকে শান্ত রাখে!
📑সুতরাং সকল সনাতনধর্ম পালনকারীদের কপালে চন্দনের তিলক দেওয়া উচিত। এতে আমাদের মন প্রভুর দিকে ধাবিত হবে আর মুখে হরি নাম থাকবে।
🏵️জয় শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ।
শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌরভক্তবৃন্দ।🏵️
🏵️হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।🏵️
0 Comments