ঋণকর্তা পিতা শত্রুর্মাতা চ ব্যভিচারিনী।
ভার্যা রূপবতী শত্রুঃ পুত্রঃ শত্রুরপন্ডিতঃ।।
(চাণক্য নীতিশাস্ত্র)
অনুবাদঃ ঋণগ্রহনকারী পিতা, অসতী মাতা,অধিক সুন্দরী স্ত্রী এবং অজ্ঞ পুত্র পারিবারিক জীবনের শত্রু।
তাৎপর্যঃ
কলিযুগের একটি লক্ষণ হলো গৃহশত্রু। কলিযুগ কলহের যুগ। বিশ্বজুরে মানুষ যুদ্ধে লিপ্ত - দেশের সাথে দেশের যুদ্ধ, দেশের ভেতরে যুদ্ধ, সম্প্রদায়ের সাথে সস্প্রদায়ের যুদ্ধ, এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও যুদ্ধ, কারও শান্তিতে বসবাসের জো নেই।
ভক্তরা প্রশ্ন করতে পারেন, কৃষ্ণভাবনাময় গৃহস্থ জীবনে এসব বিষয় আলোচনার প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে কি? কিন্তুু ইসকন ভক্তদের মধ্যেও তো ব্যভিচার, পুনর্বিবাহ ও ঋণগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা দেখা যায়, তাই চাণক্যের নীতাশিক্ষা আমাদের জন্যও প্রযোজ্য।
আমরা কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনকে একটি পরিবারের সাথে তুলনা করতে পারি। শ্রীল প্রভুপাদ প্রায়ই গুরুদেবকে পিতা এবং শিষ্যকে সন্তান হিসেবে বিবেচনা করতেন। সে জন্যেই পুত্র যদি বোকার মত আচরন করে বা নারী যদি অসতী হয়, তবে সেই প্রভাব সবার ওপর পড়বে। একই ভাবে ভক্তরা যদি পরিশুদ্ধ আচরন করে, তবে সমগ্র ইসকন পরিবারই উপকৃত হবে। প্রহ্লাদ মহারাজ বলেছেন যে, মন ও ইন্দ্রিয় ছাড়া আমাদের আর কোনো শত্রু নেই। এটিই মহাভাগবতের লক্ষণ।
যাই হোক, শ্রীল প্রভুপাদ বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীন উভয় প্রকার শত্রুর হাত থেকে আমাদের আন্দোলনকে রক্ষা করার জন্য উৎসাহিত করতেন। শ্রীল প্রভুপাদ বলেছেন যে, আমাদের আন্দোলনের প্রকৃত বিপদ নিজেদের মধ্য থেকেই আসবে। বিপদই আমাদের মতবিভেদ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে উৎসাহিত করে। ইসকন হলো ঐক্যবদ্ধ পরিবার। পরিবার হলো সাধারন উদ্দেশ্যে নিবেদিত শান্তিপূর্ণ সুখী সংঘ। তবু পরিবারে শত্রু থাকতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, কেউ যদি কৃষ্ণভাবনা প্রচারের নাম করে অপব্যয় করে, তবে আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ব্যাহত হবে। প্রচারের জন্যে এ ধরনের ব্যক্তি শত্রুও বটে।
0 Comments